প্রকাশিত: Tue, Dec 26, 2023 9:52 PM
আপডেট: Tue, Jul 1, 2025 3:50 PM

[১]তাড়াইলে সরিষার চাষ, চারদিকে হলুদের সমারোহ


রুহুল আমিন, তাড়াইল (কিশোরগঞ্জ): [২] কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের মাঠ গুলি এখন হলুদ রঙে সেজেছে। চারদিকে হলুদের সমারোহ। দূর থেকে মনে হবে পুরো এলাকা জুরে হলুদ গালিচা বিছানো। কুয়াশার জলরাশি ভেদ করে সবুজ মাঠের দেশে এখন হলুদের সমারোহ। কুয়াশা ভেজা মাঠে হিমেল হাওয়ায় হলুদ ফুল গুলি দোল খেলছে। কাছে যেতেই দেখা মেলে সরিষার ফুল ফুটেছে। অনেকে এই সরিষা ফুলের সৌন্দর্য ধরে রাখতে ক্যামেরাবন্দি করছে।

[৩] শীত যতটা বাড়বে ততই সরিষার ফলন বাড়বে তাড়াইলে। আর  চাষিরা স্বপ্ন নিয়ে বুক বেঁধে আছে ভাল ফলন পাওয়ার আশায়। চলতি রবি মওসুমে তাড়াইল উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলন আশা করছেন সরিষা চাষীরা।

[৪] তাড়াইল উপজেলায় এবার প্রায় সব মাঠে সরিষার আবাদ হয়েছে চোখে পড়ার মতো। আর অল্প কিছুদিনের মধ্যেই কৃষকের ঘরে উঠবে সরিষা। 

[৫] উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে মাঠের পর মাঠ ব্যাপক হারে সরিষার আবাদ করেছেন চাষীরা।  আবাদের মাত্র ৭৫ দিনেই এই ফসল ঘরে তোলা যায়। তেমন সেচ দিতে হয় না। বীজ বপনের সময় মাটির নিচে সামান্য পরিমাণ রাসায়নিক সার দেওয়ার পরেই ভালো ফলন পেয়ে থাকেন চাষীরা। এক বিঘা জমি চাষ করতে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকার মত খরচ হয়। সরিষা বিক্রির পর সব খরচ বাদে ৮ থেকে ১০হাজার টাকা লাভ হয়।

[৬] উপজেলার রাউতি ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের আবদুল কাইয়ূম নামের এক চাষি বলেন, মানুষ এখন সরিষার তেল খাচ্ছে বেশি। সরিষা তেলের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার কারনে বাজারে সরিষার দাম এখন বেশ ভালো। বাজার পরিস্থিতি এমন থাকলে এবারও ভালো আয় হবে সরিষা বিক্রিতে। উপজেলার তাড়াইল-সাচাইল সদর ইউনিয়নের কালনা গ্রামের সরিষা চাষি হাবিবুর রহমান জানান, তিনি সাড়ে ৩  বিঘা জমিতে দেশী জাতের সরিষা রোপন করেছেন। কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের পরামর্শক্রমে এ ফসলের ভালো ফলন আশা করছেন তিনি। মাঠে এখন সরিষার হলুদ ফুল ফুটেছে। আরো কয়েকটা দিন পর সরিষা মাড়ায় করা যাবে।

[৭] তাড়াইল উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, কম খরচ, কম পরিশ্রম আর অল্প সময়ে সরিষা চাষ করা যায় বলে এটি অত্যন্ত লাভজনক একটি ফসল। প্রতি বিঘা জমি থেকে চলতি মৌসুমে গড় ৫ থেকে ৬ মণ হারে সরিষার ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও সরিষা চাষ করলে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায় আর সরিষা তোলার পর বোরো ধান রোপণ করা সম্ভব। যার কারণে প্রতি বছরই সরিষার চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

[৮] তাড়াইল উপজেলায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে সরিষার। ভোজ্য তেল হিসেবে সরিষার তেলের চাহিদা বৃদ্ধির পাশাপাশি দাম বেশি হওয়ায় আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের। অন্যান্য ফসলের তুলনায় সরিষা চাষে কম খরচ, কম শ্রম এবং দ্রুত ফলন পাওয়া যায়। যে কারণে চাষিরা আবাদে লাভ বেশি পায়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে উপজেলায় সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। সরিষার দামও ভালো পাওয়ার আশা করছেন এ উপজেলার চাষিরা। 

[৯] তাড়াইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুমন কুমার সাহা জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে ১ হাজার ৪৬০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সরিষা আবাদ হয়েছে ১ হাজার ৪৮৫ হেক্টর জমিতে। তিনি বলেন আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে ফলন খুবই ভালো হবে। ভোজ্য তেলের চাহিদা মেটাতে সরিষার আবাদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।